মতিহার বার্তা ডেস্ক : রাজশাহী জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের ২৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. মাহাতাব হোসেন চৌধুরীর বিরুদ্ধে ইউনিয়নের কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে।
এছাড়া নানা অনিয়ন, স্বেচ্ছাচারিতা দুর্নীতি, মারপিট আর লুটপাটের মাধ্যমে রাজশাহীর পরিবহণ সেক্টরে এই শ্রমিক নেতা ত্রাসের রাজত্ব কায়েক করেছেন বলেও অভিযোগ সূত্রে উঠে এসেছে।
সম্প্রতি শ্রমিক ইউনিয়ন সদস্যদের পক্ষ থেকে লিখিত আকারে এসব অভিযোগ দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), র্যাব-৫ এর অধিনায়ক বরাবর, রাজশাহী মহানগর পুলিশ কমিশনার ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র বরাবর পাঠিয়েছেন। তবে মাহাতাব চৌধুরীর বিরুদ্ধে আনিত এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তিনি। বরং তিনি উল্টো কামাল হোসেন রবিসহ সংশ্লিষ্ট অনেকের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎ ও লুটপাটের অভিযোগ তুলেছেন।
রাজশাহী মোটর শ্রমিকদের লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, সাধারণ কর্মচারিদের অর্থায়নে শিরোইল বাস টার্মিনালের পূর্ব পার্শ্বে নির্মিত চার কোটি টাকা মূল্যের দ্বিতল ভবন মাহাতাব হোসেন চৌধুরী স্বেচ্ছাচারিতার মাধ্যমে মাত্র এক কোটি টাকায় বিক্রি করে দেন। এই টাকার মধ্যে মাত্র ৩০ লাখ টাকা ইউনিয়নের একাউন্টে জমা দেন। বাকি ৭০ লাখ টাকার কোনো হিসাব আজ পর্যন্ত দাখিল করেনি।
মাহাতাবের বিরুদ্ধে ইউনিয়নের শ্রমিকদের মারপিট করে রক্তাক্ত ও পরবর্তীতে মামলা হলে বাদিকে নানা হুমকি-ধমকি দিয়ে মামলা তুলে নিতে বাধ্য করারও অভিযোগ রয়েছে। শ্রমিক ইউনিয়নের উন্নতিকল্পের কথা বলে এই নেতা মাসের পর মাস জুয়া, সার্কাস আর যাত্রাপালার আয়োজন করেছিল। যেখান থেকে প্রতিদিন অবৈধভাবে ১০/১৫ লাখ টাকা উপার্জন করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।
অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, অবৈধভাবে উপার্জন করা এসব টাকা দিয়ে মহানগরীর টিকাপাড়া মহল্লায় ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ৬ তলাবিশিষ্ট বিলাসবহুল একটি বাড়ি নির্মাণ করেছেন। আনুমানিক ৩ কোটি টাকা দিয়ে শাবন্তী পরিবহণ নামে কিনেছেন ৬টি বাস ও ৬৫ লাখ টাকা দিয়ে কিনেছেন কালো রংয়ের টয়েটো হিনো কার। কেউ এসব অনিয়ম ও দুর্র্নীতির প্রতিবাদ করলে মাহাতাব তার ওপর হামলা, অত্যাচার ও নির্যাতন চালাতো।
তার এই অনিয়ম ও দুর্র্নীতির কারণে মাহাতাব চৌধুরীকে বর্তমান ক্ষমতাসীন দলের রাজনৈতিক সমস্ত পদ হতে অপসারণ করা হয়েছে। সবমিলিয়ে মাহাতাবের বিরুদ্ধে ১ কোটি ৮১ লাখ টাকা গড়মিল দেখা গেছে, যা যুগ্ম শ্রম পরিচালকের দপ্তরকে অবহিত করা হয়েছে।
তবে মাহাতাব হোসেন চৌধুরীর বিরুদ্ধে আনিত এসব অভিযোগের সবগুলোই মিথ্যা বলে দাবি করেছেন তিনি। বরং উল্টো তিনি বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তার একটিরও প্রমাণ কেউ দিতে পারবে না।’ তিনি বলেন, ‘মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের ৪০ শতাংশ টাকা ট্রাকে উঠতো। হিসাব করে দেখা গেছে, শ্রমিক নেতা কামাল হোসেন রবি, মোমিন ও নজুর কাছে ৩ কোটি টাকা রয়েছে। সেই টাকা তারা এখনো জমা দেয়নি।
প্রতিটি কার্ড বিক্রি করেছে ১৭ হাজার টাকা করে। সেই হিসেবে ৯ শত কার্ডের বিবিধ জমা হয়নি। মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের মেডিক্যালের এক কোটি টাকা এখনো রবির কাছে আছে। রবির বিরুদ্ধে মেলার নামে অবৈধভাবে জুয়া ও নর্তকি নাচানোর অভিযোগও করেন তিনি।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘খারাপ মানুষকে কি কখনো কেউ ভোট দেয়। আমি দুইবার কাউন্সিলর হয়েছি, শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক হয়েছি। সুত্র: উপচার
মতিহার বার্তা ডট কম ২৯ মেপ্টেম্বর ২০১৯
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.